গল্প শুধু মানুষের হয়। আমি অনেক চেষ্টা করেছি পাহাড়ের গল্প লেখার। সত্যি বলছি, পাহাড় নিয়ে আসলে কোন গল্প হয় না। গল্পের মাঝে পাহাড় আনতে হলে তাকে মানুষের মুখোমুখি হতে হয় বা অন্যভাবে বললে, যখনই মানুষ পাহাড়ের মুখোমুখি হয় তখনই কেবল গল্প জন্ম নেয়। মানুষ ছাড়া পাহাড়ের কোন গল্প হয় না।
প্রতিটি মানুষের সাথে পাহাড়ের সম্পর্ক অন্যরকম, ইউনিক! কারও সাথে কারো সম্পর্ক ঠিক মিলে না। পাহাড় সামনে চলে এলে কেউ চায় তার আড়ালে কি লুকিয়ে আছে তা সুতীব্রভাবে জানতে। ম্যালরীর মত কেউ যুদ্ধের ক্ষত লুকাতে পাহাড়ের শীর্ষে দাঁড়াতে চায়, যার মাঝে নিজেকে ধ্বংস করে দেবার, পর্বতের সাথে নিজেকে বিলীন করে দেবার অদ্ভুত নেশা চেপে বসেছিল।
ড্যাভিড ও হ্যামিলটনের মত বৈমানিকের আকাঙ্ক্ষা জাগে পাহাড়ের সূচাগ্র ডগার উপর দিয়ে সে উড়ে যাবে কখনো, ফ্রেশফিল্ডের মত কেউ চায় কোন পাহাড়ের চতুর্পাশ দিয়ে পরিপূর্ণভাবে তাকে পরিক্রমণ করতে, কেউ স্রেফ কোন শান্ত পাহাড়ের গোড়ায় বসে চুপচাপ বাকি দিনগুলো কাটিয়ে দিতে চায়, কেউ কেউ মাঝির মত পাহাড়ের বুক ফুঁড়ে অন্যের জন্য পথ বানাতে জীবন উৎসর্গ করে দেয়, কেউ ট্রাই নাইট্রো টলুইন দিয়ে নিমিষেই পাহাড়কে নিশ্চিহ্ন করে নিজের ক্ষমতা দেখাতে পেরে তৃপ্তি পায়, আবার কেউ কেউ চে’র মত পাহাড়ের ঢালে জন্মানো সবুজ কচি ঘাষে শুয়ে শুয়ে মুক্তির দিবাস্বপ্ন দেখে যায়…
এগুলো সবই আসলে আমাদের গল্প, মানুষের গল্প। এর কোন গল্পই পাহাড়ের নয়, কখনো ছিল না। সত্যি বলছি, আমি চেষ্টা করেছি অনেক; মানুষ ছাড়া পাহাড় নিয়ে কোন গল্প লেখা যায় না!