পাহাড়ের ভুত মাথায় পুরোপুরি জাঁকিয়ে বসার আগে একটা সময় ছিল যখন আমি বৈজ্ঞানিক গবেষনায় কিছুটা অবদান রাখার চেষ্টা করতাম। এর জন্য লম্বা একটা সময় কেটেছে জাহাঙ্গীরনগরের ফার্মাকোলজি ল্যাবে। বহু আকাঙ্ক্ষিত ছুটির দিনগুলো ল্যাব র্যাট আর মাইস নিয়েই কাটিয়ে দিতাম।
এই এনিমেল রিসার্চ মডেলগুলো খুব ইন্টারেস্টিং হত। ম্যাক্সিমাম সময়ই আমরা ইঁদুরগুলোর উপর ড্রাগের নিউরোলজিকাল ও সাইকোলজিক্যাল ইফেক্ট নিয়ে কাজ করতাম। সবকটা মডেলের মধ্যে সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং মডেল ছিল বিভেভিয়ার রিওয়ার্ড। এই মডেলগুলোতে হার্ডবোর্ড দিয়ে বিভিন্ন রকম মেইজ বানানো থাকত। সেই মেইজগুলোতে আবার নানা রঙ করা থাকত, প্যারামিটার কমানোর জন্য বেশীরভাগ সময়ই অবশ্য দাবার ছকের মত সাদা-কালো রঙই ব্যবহার করা হত। পরীক্ষাটা হত আমরা কোন রিওয়ার্ড বা উপহার দিয়ে ইঁদুরের আচরণ পরিবর্তন করতে পারি কিনা।
যেমন তাকে যখন মেইজে ছাড়া হবে তখন তার সামনে দুইটা পথ থাকবে, সাদা বা কালো। সে যদি কালো দাগ ফলো করে কালো রঙ করা চেম্বারে ঢুকে যায় তাহলেই কেবল তাকে ফুড ফেলেট উপহার দেয়া হবে, সাদা বক্সে গেলে আর পাবে না। এই রকম টোপ দিতে দিতে একসময় উপহার দেয়ার হার কমায় দিতাম। তবুও দেখা যেত ইঁদুরগুলো খাবারের লোভে শুধু কালো বক্সেই যেত। একসময় খাবার না দিলেও তাদের এমনই অভ্যাস হয়ে যেত যে কালো বক্স ছাড়া আরেকটাও যে অপশন আছে তারা বেমালুম ভুলে বসত। প্রতিটা মডেলেই কন্ট্রোল গ্রুপ, ড্রাগ গ্রুপ হেনতেন নানা প্যারামিটার থাকলেও বেসিক ব্যাপার ছিল বিভেবিয়ার মডিফিকেশন।
এই টার্মটা আমি একদম ভুলেই গিয়েছিলাম। গত সপ্তাহে ‘দ্যা গ্রেট হ্যাক‘ ডকুমেন্টারিটা দেখে এই টার্মটা আবার মনে পড়ে গেল। নিজেকে বিভেবিয়ার আর্কিটেক্টদের একটা সাবজেক্ট হিসেবে ভাবতে ভালই লাগতেসে। ঘুরে ফিরে একটাই প্রশ্ন মাথায় ঘুরতেসে, পালাবি কোথায়?