অ্যালপাইনিজম – আমার প্রথম পাঠ

আমি “অ্যালপাইনিজম” চর্চা করি, এই কথা টা বলার সময় নিজের অজান্তেই বুক কিছুটা চওড়া হয়ে যায়। প্রথমদিকে আব্বু যখন জিজ্ঞেস করত, তুই পাহাড়ে কেন যাস, কি করতে যাস? আমি সবসময়ই ভারিক্কি গলায় উত্তর দেই-“অ্যালপাইনিজম”।

ঝামেলা হয় তখনই যখন সে জিজ্ঞেস করে বসে “অ্যালপাইনিজম” এর মানে কি?

প্রতিবার এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গেলেই আমি থতমত খেয়ে যাই। কি উত্তর দিব? এর তো কোন প্রতিষ্ঠিত সংজ্ঞা নাই। এই শব্দের যেই গভীরতা সেটা কিভাবে আব্বুর কাছে তুলে ধরবো, কিভাবে তাকে বুঝাবো সেটা বুঝে উঠতে পারি না। আবার “পাহাড়ে উঠি” ধরণের খেলো উত্তর দিতেও ইচ্ছা করে না।

“অ্যালপাইনিজম” একটা দর্শন।

“অ্যালপাইনিজম” একটা লাইফ স্টাইল।

“অ্যালপাইনিজম” একটা বিশ্বাস।

“অ্যালপাইনিজম” মানে হচ্ছে কারো সাহায্য না নিয়ে নিজের সামর্থ্যের উপর ভর দিয়েই সব কিছু করা।

এই খেলায় নো শেরপা, নো গাইড, নো পোর্টার, নো কুক, নো সাপোর্ট- শুধুই আমি।

“অ্যালপাইনিজম” হইল ট্রু মাউন্টেনিয়ারিং, অনেস্ট মাউন্টেনিয়ারিং, ফেয়ার মাউন্টেনিয়ারিং।

মাউন্টেনিয়ারিং মানেই হচ্ছে “অ্যালপাইনিজম”। এটাই সত্যি। এর বাইরে আর কিছু নাই।

ইত্যাদি …

ইত্যাদি…

এইসব ভারী ভারী কথা বলে প্রতিবারেই তাকে একটা ভুজুং ভাজুং দিয়ে দেই। যদিও বেশ কয়েক বছর ধরেই আমি আব্বুকে এই বিষয়ে দিক্ষিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যখনই আমি একটা বই নিয়ে আসি, সব সময়ই চেষ্টা থাকে আব্বুকে যেন এই বইটা গেলানো যায়। তিন চার বার গেলানোর পর আব্বু নিজেই খুঁজে খুঁজে এই ধরনের বই গুলো এখন গিলতে থাকে। রিসেন্টলি অদ্রি পাঠাগার থেকে আনা কাঞ্চনজঙ্ঘার উপর লেখা বইটা পড়ার সুযোগই পাচ্ছি না আমি।

যাই হোক, কথা হচ্ছিল “অ্যালপাইনিজম” নিয়ে। আবার সেখানেই ফিরে যাই। আমার কাছে এই শব্দের অর্থ টা কি? আমি আসলে অ্যালপাইনিজম” বলে এটা কি চর্চা করে যাচ্ছি? আর কেনই বা চর্চা করে যাচ্ছি? এই অ্যালপাইনিজম” চর্চা করে আমি পাচ্ছি টাই বা কি?

যখনই নিজেকে এই প্রশ্ন গুলো করি তখন মাথায় অনেক কিছুই গিজগিজ করে। নিজের স্বত্তা তখন নিজেকেই প্রশ্ন করে। সে তখন নিজেই আবার উত্তর দেয়। কঠিন সমালোচকের মত আবার সে পালটা প্রশ্ন করে। সে লজিক দেখায়, সেই লজিকের আবার থাকে এন্টি লজিক। সেই আবোল তাবোল কথা গুলো পরে আর গুছিয়ে লেখা হয় না।

কঠিন এক শীতের রাতে, তাবুর ভিতর স্লিপিং ব্যাগে শুয়ে কণকণে ঠান্ডায় থরথর করে কাঁপতে কাঁপতে, সূর্য কখন উঠবে সেই মাহেন্দ্রক্ষণের প্রতীক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে ভেবেছি- কেন?  কেন এই কষ্ট করা? কেউ তো আমাকে বাধ্য করে নাই এত কষ্ট করার জন্য? কি কারনে আমি এত কষ্ট সহ্য করছি? আমার পাশে যে শুয়ে কাঁপছে সে কেন এই কষ্ট সহ্য করছে? আসলেই তো। এটা মোটেও স্বাভাবিক কিছু না। এই কষ্ট সহ্য করার জন্য আমি কোন পুরষ্কার পাব না, কেউ আমাকে নিয়ে মাতামাতি করবে না, ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ পাব না, পেপারে ছবি ছাপাবে না, টিভিতে দেখাবে না, কেউ লাখ খানেক টাকা দিবে না। তবুও কেন?  এর উত্তর এতটা সহজ নয়।

তাই “অ্যালপাইনিজম” এর সংজ্ঞা দেয়া তো দূরের কথা, একে ব্যাখ্যা করাই তো একটা মুশকিল কাজ। এর পিছনে অতল এক ‘কুম’ আছে। যেখানে ডুব দিয়ে আমি এখনো তলানি পাইনি। আমি বুঝার চেষ্টা করছি- সেই বোধ টুকু যেটা আমাকে এই দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে…

প্রথম পাঠের কথা ভাবতেই গত বছরের অভিযানের কথা মাথায় চলে আসলো। অক্টোবরের মাঝামাঝি গিয়েছিলাম একটা পর্বতের রেকি করতে। নাম কারচা পর্বত। ৬২৭০ মিটার উঁচু এই পর্বতে যাওয়ার সম্ভাব্য দুটি রুটের কোন টা বেশী ফিজিবল আর রিক্স কম সেটাই যাচাই করা এই অভিযানের মূল উদ্দেশ্য ছিল। আমাদের তিনজনের দলের একজন অভিযান শুরু হওয়ার আগেই ছোট একটা দূর্ঘটনায় মারাত্বকভাবে আহত হয়ে যান। পরে আমাদের দুইজনকেই অভিযানের শেষ ধাপটুকু যেতে হয়েছিল।

সেদিন ক্যাম্প দুই থেকে আমরা প্রথমবারের মত কালিনালা হিমবাহের উপর ক্যাম্প তিন স্থাপন করেহিলাম। হাঁটু সমান তুষারের উপর এই প্রথমবারের মত আমাদের ক্যাম্প। সেদিনের তাপমাত্রা ছিল হিমাঙ্কের ১৮ডিগ্রি সেলসিয়াস নীচে। এই তাপমাত্রায় তাবু টানানো আর রাত কাটানোর ইতিহাস আরেক দিন আলোচনা করব। এটা হবে আমার দ্বিতীয় পাঠ। এখন আমরা সরাসরি প্রথম পাঠে ফিরে যাই।

তাবু টানিয়ে ক্যাম্প সেট করে এইবার আমাদের প্রথম কাজ খাওয়ার পানি বানানো। এখন কারো মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, খাওয়ার পানি কিভাবে বানায়? তাদের জন্য বলছি, নরম তুষার গলিয়ে খাওয়ার পানি বানাতে হয়। আর এই জন্য প্রথমেই হাঁটু সমান বরফের মধ্যে বসে চুলা জ্বালাতে হয়। আর এটাই আমার প্রথম পাঠ- পাহাড়ে চুলা জ্বালানো।

সেদিন বাইরে ভয়ানক রকমের বাতাস বইছিল। বিকাল থেকেই আকাশের গায়ে কালো কালো মেঘ জমতে দেখেছি। গতকাল ও এই রকম সময়ে স্নোফল শুরু হয়েছিল। আজকেও যে হবে সেটা আবহাওয়াবিদ না হয়েও অনায়াসে বলে দেয়া যায়। তাই আমরা তাড়াতাড়ি তুষার গলিয়ে পানি বানানো ও রান্না করার কাজ টা শেষ করে তাবুতে ঢুকে যেতে চাচ্ছিলাম।

কিন্তু উপর থেকে উপর ওয়ালা মুচকি মুচকি হাসছিলো। আমি সদ্য কেনা স্টোভ টা নিয়ে বরফ দিয়ে একটা ঘেরাও এর মত বানিয়ে নিলাম। একটি বড় পাথরের উপর স্টোভ টা রেখে চারিদিক দিকে আলুমিনাম শিট দিয়ে ঢেকে দিলাম যেন বাতাস না লাগে। এরপর তেলের বোতলে পাম্প করা শুরু করলাম। একটা দুটা তিন টা…দশ বিশ টা দেয়ার পরই হাঁফিয়ে গেলাম। তখনই মনে পড়ে গেলো আমি সমূদ্রপৃষ্ঠ থেকে এখন ৫৪০০ মিটার উপরে আছি। এরপর শুরু হল আমার আসল পরীক্ষা। স্টোভের মধ্যে তেল এডজাস্ট করা। স্টোভে তেল যাচ্ছে কিনা দেখার জন্য আমাকে ঝুঁকে দেখতে হচ্ছিলো। মাথায় আবার হাই পাওয়ারের হেড ল্যাম্প। হেডল্যাম্পের আলো আলুমিনাম শিটে প্রতিফলিত হয়ে চোখ ধাঁধিয়ে দিল আমার। অনেকক্ষন যাপত আমি চোখে কিছু দেখছিলাম না। সেই সময় সোয়েব ভাই আবার গিয়েছে পাতিলে তুষার সংগ্রহ করতে। রাতে তাপমাত্রা নেমে যাওয়ার নরম তুষার ও তখন শক্ত হয়ে গেছে।

চোখের দৃষ্টি কিছু টা ঠিকঠাক হতেই আমি দিয়াশলাইয়ের কাঠি জ্বালানোর চেষ্টা করলাম। মোটা গ্লাভস দিয়ে কোন রকম কাঠি জ্বালানো গেলেও স্টোভের সেই সরু জায়গা দিয়ে কাঠি দিয়ে আগুন জ্বলানো সম্ভব হল না। এখন আমাকে হাত থেকে গ্লাভস খুলতে হবে। কাউকে বলে বুঝাতে পারব না গ্লাভস টা খোলার সাথে সাথে হাত জমে যাওয়ার অনুভূতি কতটা বাজে হতে পারে। মনে হবে চাপাতি দিয়ে কেউ হাত কেটে ফেলেছে। এরপর শুধু যুদ্ধ করে যাওয়া।

কাঠি জ্বালাই, বাতাসে নিভে যায়।

কাঠি জ্বালাই, স্টোভের কাছে নিতে নিতেই কাঠি নিভে যায়।

আবার কাঠি জ্বালাই, স্টোভের কাছে নিয়েও যাই ঠিকঠাকভাবে। কিন্তু হাতটা সলতের সাথে স্পর্শ করার সাথে সাথে নিভে যায়।

এদিকে আমার হাতের অবস্থা খারাপ। ভালোভাবে হাত মুঠ করতে পারছি না। বারবার হাত ঘষে ঘষে চামড়া উঠিয়ে ফেলেছি। জংঘার ফাঁকে, দুই বগলের মাঝের গরমে সেঁক দিয়ে হাতের রকত চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আর সেই সাথে চলছে স্তোভ জ্বালানোর চেস্টা।

প্রায় বিশ পচিঁশ মিনিট চেষ্টা পর স্টোভে প্রাথমিক আগুন টা ধরে গেলো। কিন্তু যেই কপার কয়েল উতপ্ত হয়ে কেরোসিন টা গ্যাস হওয়ার পালা এল বাতাসের এক ঝপটায় আগুন নিভে গেল।

সেই মুহুর্তের হতাশা কখনো কাউকে বুঝানো যাবে না। এদিকে বিকালে এক ঢোঁক পানির পর আর গলা ভেজানো হয়নি। চুলা জ্বালাতে না পারলে তুষার গলানো যাবে না। তুষার গলিয়ে পানি বানাতে না পারলে কাবার মত পানিও পাওয়া যাবে না। আর পানি না পেলে কিছু রান্না ও করা যাবে না। আর গরম ও ভারী কিছু না খেলে রাতের হিম ঠান্ডায় হাইপোথারমিয়া হয়েই মরে যাব। তাই যেভাবেই হোক এই চুলা জ্বালাতেই হবে। বেঁচে থাকার শর্ত এখন চুলা ধরানো।

এদিকে আমার পা ভেঙে যাওয়ার পর বেশীক্ষণ একভাবে বসে থাকতে পারি না। পিঠ অসম্ভব ব্যাথা করে। আর এই চুলা ধরাতে গিয়ে আমি ১ ঘন্টার উপর একভাবে ঝুঁকে বসে আছি। পায়ের মধ্যে ঝিঁ ধরার সাথে সাথে পিঠে তখন চিনচিনে ব্যাথা টা ধীরে ধীরে উপরের দিকে উঠছে। এখন আমাকে এর সাথেও যুদ্ধ করা লাগবে। দাঁতে দাঁত চেপে আবার চেস্টা করা শুরু করলাম।

কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। একটি দিয়াশলাইয়ের বক্স শেষ করে রেগে মেগে আমি উঠে পড়লাম। আর সহ্য হচ্ছে না। একদিকে চুলা ধরানোর ব্যর্থতা, পানি না খাওয়া, চরম ঠান্ডা, হাত জমে যাওয়া, পিঠে ব্যাথা, অক্সিজেনের স্বল্পতা, আর বাতাসের শোঁ শোঁ আওয়াজ…সব কিছু মিলিয়ে আমি তখন পুরোপুরি ভেঙে পড়েছি।

আমার রাগ, দুঃখ, হতাশা মিলেমিশে তখন একাকার। সব ছুঁরে ফেলে আমি দূরে একটা জায়গায় গিয়ে বসলাম। তখনই ভাবনা আসলো, এখন কি? সবকিছু ফেলে তাবুতে ঢুকে ঘুমিয়ে যাব? পানি না খেলে তো ডিহাইড্রেশন হয়ে যাবে? কিছু খাওয়া ও দরকার। কিছু না খেলে শরীরের ভিতরেই তাপ তৈরী হবে না। হয়ত এই তাবুর ভিতরেই মরে পড়ে থাকতে হবে। চুপচাপ মাথা নীচু করে অনেকক্ষন ভাবলাম। পরে দেখলাম শুধুমাত্র বেঁচে থাকার তাগিদেই সারারাত ধরে দরকার হলে এই চেস্টা চালিয়ে যেতে হবে।

পাশে থাকা সোয়েব ভাই এতক্ষন চুপচাপ সব কিছু দেখে যাচ্ছিলো। একটু পরেই আমার কাঁধে হাত রেখে পাশে এসে বসলো। এরপর শুধু একটা কথাই বলল, “চলেন আরেকবার ট্রাই করি”।

আমারও মনে হয় এইটুকু স্পার্কেরই দরকার ছিল। আমরা দুজন মিলে আবার চেস্টা শুরু করলাম। কিন্তু কিছুক্ষনের মধ্যে তুষারপাত শুরু হয়ে গেল। চুলার উপর তুষার এসে পড়ে চুলা ভিজিয়ে দিলে আর কিছু করা যাবে না। তাই সোয়েব ভাই উপর থেকে একটা কালো পলিথিন ধরে রাখল। আমি আবার চেস্টা শুরু করলাম।

আমার চারদিকের পৃথিবী্তে থাকা সব ঝুট ঝামেলা, এই পাহাড়, পর্বত, নীচের বরফ, উপর থেকে নেমে আসা কুচি কুচি তুষার, চরম ঠান্ডা, জমে যাওয়া হাত, পিঠে ব্যাথা সব কিছু ভুলে আমার তখন একটাই চিন্তা- আগুন ! আমার এখনো মনে আছে, আর যেন ভুল না হয় তার জন্য আমি পুরো মনযোগ দিয়ে কিভাবে কি করব তার একটা ট্রায়াল দিয়ে নিলাম। এর আগে যত গুলো ভুল হয়েছিল সেগুলো কেন হয়েছিল সেটা আগে বুঝার চেস্টা শুরু করলাম। পাথরের যেই ফাঁক দিয়ে বাতাস আসছিলো সেই ফাঁক টাকে বন্ধ করলাম। সব কিছু যখন নিজের আয়ত্বে চলে এসেছে বলে মনে হল তখন একটি মাত্র কাটি দিয়েই চুলা টি ধরে গেল। এমএসয়ার চুলার উজ্জ্বল নীল আলো আর তার তীব্র শোঁ সোঁ আওয়াজ শুনে মনে হল এর চাইতে শ্রেষ্ঠ পুরষ্কার আর হতেই পারে না। একটা তৃপ্তির আনন্দ পুরো শরীরে আমি অনুভব করতে পারছিলাম। সেদিনের তুষার গলানো পানির স্বাদের সাথে অন্য কোন কিছুর তুলনা না।

সেই রাতে ভরপেট খেয়ে দেয়ে, দুই লিটার গরম পানি থার্মাল ফ্লাক্সে ভরে, রাতের আকাশের ছায়াপথ দেখে- জীবন কতই না সুন্দর- এই বিষয়ে একমত হওয়ার পরই আমরা ঘুমাতে গিয়েছিলাম।

পরে আমি এই ঘটনা টা নিয়ে অনেক ভেবেছি। এই জায়গায় যদি  আমি তাবুতে বসে আরাম করতাম। আর অন্য কেউ আমাকে পানি  এনে দিত তাহলে কি আমার এতটাই ভালো লাগত। অন্য অভিযানের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি মোটেও না। রান্নার জন্যই শুধু দুইজন লোককে ভাড়া করে সাথে নিয়ে গিয়েছিলাম একটি অভিযানে। তারা সকালে তাবুতে গরম চা পৌঁছে দিত। দুই ঘন্টা হাঁটার পরেই আবার চা দিত। তিনবেলা খাবার তারাই রান্না করত, বরফ ও তারাই গলাত, পানিও তারাই ভরে নিয়ে আসত আর আমরা নবাবের মত শুধু খেতাম। আমাদের কিছুই করা লাগত না। আমাদের রেশন ও আমাদের বহন করতে হত না। তারাই সব বহন করত। তারাই চুলা, তেল সব কিছু বহন করত। আমরা শুধু তাদের টাকা দিয়েছিলাম। টাকার বিনিময়ে তারা আমাকে খাইয়েছে, পানি গরম করে দিয়েছে, তাদের বদৌলতেই আমি পাহাড়ে যেতে পেরেছিলাম।কিন্তু এইভাবে পাহাড়ে যাওয়ার কি কোন অর্থ আছে? এখানে টিকে থাকার জন্য যা যা কৌশল জানা দরকার তার কিছুই তো আমি জানিনা। পাহাড়ে যাওয়ার নিজের কোন যোগ্যতাই আমার হয়নি।

তাই পাহাড়ে নিজের টিকে থাকার যোগ্যতা অর্জন করাই আমার কাছে অ্যালপাইনিজম। আমার যা ভালো লাগে সেটা করতে আমার অন্য কারো দিকে তাকিয়ে থাকা লাগবে না। নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী সেটা করতে পারব। ‘আমি পারি’- নিজেকে এটা বলতে পারাই আমার কাছে অ্যালপাইনিজম। হাল না ছাড়া, নিজের উপর বিশ্বাস রাখা, মনঃসংযোগ আর একাগ্রতা- এইতো আমার জন্য “অ্যালপাইনিজম”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!